Monday, April 29, 2024

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?Affiliate marketing করে কিভাবে টাকা আয় করবেন

আপনি যদি একটি ব্লগ ও ওয়েবসাইট চালান বা ধরুন আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে, তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং আপনার অনলাইন ইনকাম এর সেরা মাধ্যম হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। এমনিতেও, ব্লগ থেকে টাকা আয় এবং ইউটিউবের থেকে অনলাইন ইনকামের অনেক মাধ্যম আমাদের কাছে রয়েছে। সেগুলির মধ্যে, Google Adsense সেরা৷ কিন্তু, এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করাটা আজ সব থেকে বেশি লাভজনক এবং ব্লগার দেড় মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত উপায় হিসেবে আমরা বলতে পারি। 

তাহলে, এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? (affiliate marketing) কিভাবে শুরু করবেন, এর দ্বারা কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং কিভাবে এই এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা টাকা আয় করা যায়, এই সব প্রশ্নর উত্তর আমরা এক এক করে নিচে জানবো

শুরু করার আগেই আমি আপনাদের একটা কথা জানিয়ে রাখতে চাই। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার জন্য বা এর লাভ নেয়ার জন্য আপনাদের অবশ্যই একটি “ব্লগ”,’ইউটিউবের চ্যানেল”বা “ওয়েবসাইটের” প্রয়োজন হবে। আর আপনি চাইলে ফেসবুক পেজ বা যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া পেজে affiliate marketing করতে পারবেন৷কিন্তু, সেটা বেশি কার্যকর বা লাভদায়ক হবেনা। সেটা আপনারা এই আর্টিকেলটি মনযোগ দিয়ে পড়লেই বুঝতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? (What is affiliate marketing)?

অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস কমিশনের বিনিময়ে প্রোমোট ও বিক্রির প্রক্রিয়াকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। শুনতে সহজ একটি বিষয় মনে হলেও এই প্রক্রিয়ার কার্যক্রম কিন্তু যথেষ্ট জটিল। ধরুন এফিলিয়েট মার্কেটিং/Affiliate Marketing হল কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কোন প্রোডাক্ট/ Product অথবা কোন সেবা বিক্রি করে দেয়া, এবং প্রতিটি বিক্রয়ে/Sale এর বিপরীতে বিক্রয়ের মূল্যের ওপর % হারে কমিশন নেয়া। অর্থাৎ আপনি যদি কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রয়ে/Sale করে দেন, সে কোম্পানির বিক্রয়ের উপর 2% থেকে 70% পর্যন্ত কমিশন দেবে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং যার জনপ্রিয়তা সব সময়ই আকাশচুম্বী।

মনে করুন আপনি amazon.com থেকে  অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট করে সেখান থেকে আপনি একটি মোটরসাইকেল বিক্রয় করলেন। যদি মোটর সাইকেলের মূল্য 200000/- টাকা হয়, এবং আপনি যদি 5% কমিশন পান তাহলে আপনার আয় হবে 200000*5% = 10000/- টাকা।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, অন্যের পণ্য বা সেবা বিক্রির ব্যবস্থা করে কমিশন আয় করাকেই বলা হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন ? (How to start Affiliate Marketing):

Affiliate-marketing-করে-কিভাবে-টাকা-আয়-করবেন

আমি নিচে ৬টি সোজা পয়েন্ট বলবো, যেগুলি অনুসরন করে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাজ শুরু করতে পারবেন।

১.প্রথমত, আপনার একটি ব্লগ,ইউটিউবের চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থাকতে হবে। এবং, সেই পেজ, ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেলে অনেক ট্রাফিক, ভিসিটর বা লাইক থাকতে হবে। কারণ, যেকোনো প্রোডাক্টের এর মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জরুরি অডিয়েন্স যাদের কাছে আপনি প্রোডাক্ট শেয়ার বা মার্কেটিং করবেন৷ এবং, যেকোনো জিনিস অনলাইনে মার্কেটিং করার এই ৪ টি সেরা মাধ্যম রয়েছে। 

২.এখন আপনার একটি ব্লগ,ইউটিউবের চ্যানেল বা ফেসবুক পেজ, এগুলির মধ্যে যদি একটিও থকে, তাহলে এখন আপনি একটি ভালো (Affiliate program) জয়েন করতে হবে৷ যেকোনো অনলাইন (Affiliate program) জয়েন করার পর আপনি তাদের সামগ্রী বা প্রোডাক্ট প্রোমোট বা শেয়ার করতে পারবেন খবু সহজেয়।

৩.এখন (Affiliate program) জয়েন করার পর, আপনি কেমন সামগ্রী বা প্রোডাক্ট লোকেদের সাথে শেয়ার করবেন সেটা আপনাকেই বাছাই করতে হবে৷ 

আরো পড়ুন..

৪.আপনার বেঁচে নেয়া প্রোডাক্ট বা সামগ্রীর বিনিময়ে আপনাকে একটি Affiliate লিঙ্ক দেয়া হবে৷ এই, এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে লোকেরা আপনার শেয়ার বা প্রোমোট করা প্রোডাক্টের পেজে আসতে পারবে৷। এবং, এখান থেকেই তারা সেই প্রোডাক্টটি ডাইরেক্ট কিনে নিতে পারবেন।

৫.এরপর আপনাকে দেয়া প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক আপনি নিজের ব্লগ, ইউটিউবের চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে লোকেদের সাথে শেয়ার করে মার্কেটিং করতে পারবেন।

৬.এখন,আপনার শেয়ার করা প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে যদি কেও সেই সামগ্রী বা প্রোডাক্টটি কিনেন,তাহলে আপনি Affiliate Network টির তরফ থেকে Commission পাবেন।

তাহলে, এই ৬টি সোজা স্টেপস পোরে হয়তো আপনারা বুঝেই গেছেন যে, এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন।

আরো পড়ুন..

এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা কত টাকা আয় করা যাবে ?

সত্যি বললে, এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি কত টাকা আয় করবেন, সেটা আপনার উপর নির্ভর করবে । বর্তমানে, লোকেরা কেবল এই মাধ্যমে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা কমিশন হিসেবে কামিয়ে নিচ্ছেন আর তাই আপনি চেষ্টা করলে মাসে কয়েক হাজার তো সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু, Affiliate Marketing সম্পর্কে জানতে আপনার একটু সময় নিশ্চই লাগবে।

মনে করুন আপনার একটি ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেল আছে এবং আপনি তাতে Blogging এর ওপর টিউটোরিয়াল আর্টিকেল লিখেন বা ভিডিও চ্যানেলে আপলোড দেন৷ সেহেতু, আপনি Blogging এর সাথে জড়িত আর্টিকেল লিখেন বা ভিডিও নিজের ইউটিউবের চ্যানেলে আপলোড দেন,তাই আপনার ব্লগে বা চ্যানেলে আশা বেশির ভাগ ভিসিটর্সরা ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন কেনাতে রুচি রাখতে পারে৷ এখন, আপনার যেটা করতে হবে, আপনি ভালো একটি domain) এবং hosting কোম্পানিতে গিয়ে নিজেকে Affiliate হিসেবে রেজিস্টার করে তাদের প্রোডাক্ট নিজের ইউটিউবের চ্যানেল বা ব্লগের আর্টিকেলে এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে প্রোমোট করতে পারবেন এবং নিজের ভিসিটর্স দের সেই প্রোডাক্ট গুলি কিনতে বলতে পারবেন। আপনি প্রত্যেক purchase এ ১০% থেকে ২০% পর্যন্ত আয় করতে পারবেন৷

এগুলো অবশ্যই পড়বেন—

এখন,যদি আপনার প্রোমোট করা এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে আপনার ভিসিটর্সরা মাসে ২০ টা প্রোডাক্ট যেমন ডোমেইন বা হোস্টিং কেনে, এবং একটি হোস্টিং প্যাকেজের দাম বছরে ৭০০০ হয় আর প্রত্যেক কেনাতে আপনাকে ২০% কমিশন দেয়া হয় তাহলে আপনার মোট ইনকাম হবে।

৭০০০*২০-১,৪০,০০০/-

১,৪০,০০০*২০/১০০ -২৮,০০০/-

তাহলে আপনি মোট ২৮,০০০ টাকা এক মাসেই আয় করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় যার উপর পুরপুরি নির্ভর করে,

  •  আপনি কত দামি জিনিস এর মার্কেটিং করছেন।
  • প্রত্যেক বিক্রিতে আপনাকে কত টাকা দেয়া হচ্ছে কমিশন হিসেবে।
  • আপনি কতটি প্রোডাক্ট এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে বিক্রি করিয়েছেন।
  • যেই প্রোডাক্ট আপনি মার্কেটিং করছেন তার চাহিদা আছে কি না৷

এই জিনিস গুলির ওপরে নির্ভর করেই আপনার এফিলিয়েট ইনকাম নির্ভর করবে। অল্প কঠিন, কিন্তু আপনি একবার এই অনলাইন ব্যবসা ধরে ফেললে এতো টাকা আয় করতে পারবেন যে আপনি ভাবতেও পারবেননা। এইটা পুরোটাই একটি অনলাইন ব্যবসা। অনলাইনে অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলির বিষয়ে আপনি লোকেদের জানিয়ে সেই প্রোডাক্ট গুলি বিক্রি করিয়ে দিতে পারবেন৷ অন্যদের প্রোডাক্ট বিক্রি করান এবং কমিশন নিয়ে যান।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করা যায়?

একজন কনজ্যুমার যখন অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে কোনো প্রোডাক্ট ক্রয় করেন, তখন একজন অ্যাফিলিয়েট কি হিসাবে আয় করেন – এটি একটি বহুল আলোচিত বিষয়। একজন কনজ্যুমারের ফর্ম সাবমিশন, ক্লিক, পারচেজ, ইত্যাদি অ্যাক্টিভিটি থেকে একজন অ্যাফিলিয়েট আয় করতে পারে। যেমনঃ

  • প্রতি সেলঃ এটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল। এই পেমেন্ট মডেলে একজন অ্যাফিলিয়েট দ্বারা হওয়া সেল এর উপর ভিত্তি করে কমিশন দেওয়া হয়।
  • পার ক্লিকঃ এই পেমেন্ট মডেলের ক্ষেত্রে কমিশন পেতে সেল হওয়া লাগে না। বরং কোনো কনজ্যুমার অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করলেই অ্যাফিলিয়েট কমিশন দেওয়া হয়।
  • প্রতি লিডঃ একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার দ্বারা জেনারেট করা প্রতি লিড এর জন্য পেমেন্ট করা হয় এই মডেলে।

আয় করা টাকা কিভাবে তুলবেন?

এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আয় করা কমিশন ইনকাম আপনি অনেক সহজে নিজের ব্যাঙ্ক একাউন্টে (Bank account) তুলে নিতে পারবেন। ব্যাঙ্ক একাউন্ট দেয়ার জন্য আপনাকে সঠিক অপসন দেয়া হবে৷

আমার শেষ কথা..

যদি আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন। তাহলে আশা করা যায় আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে একটা পরিস্কার ধারনা পেয়ে গেছেন।

Businesses BDhttps://www.businesslinear.com/
Lorem ipsum is a placeholder text commonly used to demonstrate the visual form of a document or a typeface without relying on meaningful content

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles