মাহমুদুল হাসান সোহাগ, আমাদের সবার প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। কে বলবে, দাঁড়ি-টুপিওয়ালা এই ভদ্রলোকটি এক সময় নাস্তিকতার আদশে বিশ্বাসী ছিলেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার হিদায়াতে, ইসলামের আলো তাকে অন্ধকার থেকে দ্বীনের পথে নিয়ে এসেছেন। চলুন তার জীবনী সম্পর্কে জেনে আসি।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ এর জীবনীঃ
আমাদের সবার প্রিয় মাহমুদুল হাসান সোহাগ, ১৯৮৩ সালে জামালপুর জেলা-এর সরিষাবাড়ী উপজেলাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় জামালপুর জেলা-এর সরিষাবাড়ী উপজেলাতেই। সেখানে প্রথমে নাসিরউদ্দিন কিন্তারগার্ডেন তারপর রিয়াজউদ্দিন তালুকদার উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট) পর্যন্ত পড়ালেখা করেন ৷ মাহমুদুল হাসান সোহাগ এসএসসিতে ঢাকা বোর্ডের মধ্যে ৫ম হয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন এবং ঢাকা বোর্ড থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থান অধিকার করেন। মাহমুদুল হাসান সোহাগ বুয়েটের ২০০০ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
তখন থেকেই মূলত তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যার জন্য দেশেই বিভিন্ন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে সমাধানের চেষ্টা করতেন। সফলতার সথে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বা ইলেট্রিক্যাল বিভাগ থেকে বিএসসি পাস করেন। পাস করার আগেই তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-এর আইআইসিটিতে (IICT) রিসার্চ এসিস্টটেন্ট হিসেবে ছিলেন এবং পাস করার পর রিসার্চ ইন্জিনিয়ার হিসেবে কিছুদিন কর্মরত ছিলেন। সেটাই ছিলো তার প্রথম এবং শেষ চাকরি। তার মূল লক্ষ্য
ছিলো উদ্যোক্তা হওয়ার। (উল্লেখ্য যে ২০০০ সালে মাত্র ছয় হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাহমুদুল হাসান সোহাগ প্রতিষ্ঠিত উদ্ভাস এর যাত্রা শুরু হয়)। উদ্ভাস-উন্মেষ শিক্ষা ব্যবস্থার সফল প্রতিষ্ঠাতা তিনি। প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় অনলাইন ভিত্তিক বুকশপ (rokomari.com) এর। বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন ভিত্তিক স্কুল অন্যরকম পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা তিনিই, যার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আয়মান সাদিক তৈরি করেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন স্কুল ‘টেন মিনিট স্কুল’।
তিনি একাধারে প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিঃ, টেকশপ বাংলাদেশ লিঃ, অন্যরকম সফটওয়্যার লিঃ, অন্যরকম প্রকাশনী লিঃ, অন্যরকম সল্যুশনস লিঃ, অন্যরকম ওয়েব সার্ভিসেস লিঃ, অন্যরকম ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি লিঃ এর মতো সফল প্রতিষ্ঠানগুলোর।
এগুলো অবশ্যই পড়বেন—
- অন্যরকম উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান সোহাগ এর জীবনী
- জিম সিমন্সের সফলতার গল্প
- 10 জন বিখ্যাত মহিলা আর্থিক উপদেষ্টা
তিনি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড-এর একাডেমিক কাউন্সিলরও ছিলেন। তিনিই বাংলাদেশে প্রথম ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন(EVM) তৈরি করেছেন। যার ঝুলিতে আছে দেশ-বিদেশের অনেকগুলো পুরস্কার ও সম্মাননাও।
আমাদের দৃষ্টিতে একজন সফল মানুষ তিনি। কিন্তু “টেন মিনিট স্কুল” এর প্রতিষ্ঠিতা আয়মান সাদিক তাঁকে যখন তাঁর জীবনের লক্ষ্য জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কী উত্তর দিলেন জানেন? তাঁর জীবনের লক্ষ্য হলো, “যতো বেশি সংখ্যক মানুষকে নিয়ে জান্নাতে যাওয়া যায়।”
এই মানুষটাই আগে ছিলেন নাস্তিক, সেকুলার। সেই মানুষটা একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে হয়ে গেলেন একজন প্র্যাকটিসিং মুসলিম। সমাজের তথাকথিত সফলতার সংজ্ঞায় যিনি একজন অন্যতম সফল মানুষ তিনিই কিনা খুঁজছেন অন্য সফলতা!
আমার দৃষ্টিতে তিনি একজন সফল মানুষ, যিনি কিনা পেয়েছেন উনার রব; আমাদের সবার রব, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার হিদায়াত। তাই তিনি ছুটে চলেছেন চির সফলতার দিকে।