একটি ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সেরা সময় পার করছে। বাংলাদেশী তরুণ উদ্যোক্তারা চাকরি না করে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করতে অত্যন্ত আগ্রহী। কিন্তু তারা কি ধরনের বিজনেস শুরু করতে পারেন তা নিয়ে ভালো আইডিয়া না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তবে এটার জন্য হতাশার কোনো কারণ নেই।
একটি ব্যবসা দ্রুত শুরু করাটা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্পষ্টতই দুর্দান্ত উদ্যোগ। আর অনলাইনে খুব কম খরচে ব্যবসা শুরু করাটা বর্তমান সময়ে খুবি সহজ। খুব কম খরচে ঘরে বসেই কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক বেকার ছাত্র ছাত্রী। এছাড়াও ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় করা যায় খুব সহজেই? আমরা কথা বলব, খুব কম খরচে অনলাইনে কাজ করার মত সেরা ১০ টি বিজনেস আইডিয়া নিয়ে।
অনলাইনে ব্যবসা শুরু করার সুবিধা কী?
অনলাইন ব্যবসা শুরু করার অনেক সুবিধা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বাধিক সুবিধা হ’ল এটি অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কাজটি আপনার বাড়ি বা কোনও ছোট ভাড়ার জায়গা থেকে শুরু করা যেতে পারে। এবং অনলাইন ব্যবসা শুরু করার জন্য বাসার একটু জায়গা, একটি ভাল ইন্টারনেট সংযোগ, এবং কিছু ব্যবসার ধারনা থাকতে হবে। তাহলেই আপনি খুব সহজেই সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন। আপনি খুব ছোট স্কিল ব্যবসায়িক আইডিয়া দিয়ে শুরু করতে পারেন এবং পরে এটিকে পরিপূর্ণ বড় ব্যবসায়ে পরিণত করতে পারেন। একটি ইন্টারনেট ব্যবসায়ের ধারণা সহ, আপনাকে সরবরাহ এবং অতিরিক্ত ব্যয় সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করতে হবে না।
১০ টি সেরা অনলাইন ব্যবসায়ের আইডিয়াঃ
আসুন একটি অনলাইন ব্যবসা শুরু করার জন্য শীর্ষ ১০টি ব্যবসায়িক ধারণার একটি তালিকা নিয়ে আলোচনা করা যাক
-
এসইও শুরু করুন (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন):
SEO মানে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। ওয়েবসাইটের প্রায় পুরোটাই SEO এর উপর নির্ভর করে। এসইও সেটআপ দেখে, একটি সার্চ ইঞ্জিন একটি ওয়েবসাইটের প্রাসঙ্গিকতা পরিমাপ করে। বর্তমানে এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা অনেক বেশি। তবে এসইও এক্সপার্ট হতে খুব বেশি কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না,যে কোন ছাত্র এটা করতে পারে। এখনি যান এবং “এসইও” শব্দটি গুগল করুন, ফলে আপনার সামনে প্রচুর টিউটোরিয়াল আসবে। এসইও এর টিউটোরিয়াল পেতে আপনি ইউটিউব ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপওয়ার্কের সাথে কাজ শুরু করতে পারেন, কারণ তারা এসইও সম্পর্কিত কাজ অফার করে।
-
অনলাইন কোর্স বা কোচিং:
বর্তমান সময়ে অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনার জ্ঞান বা দক্ষতা বিক্রি করে নেওয়া সহজ হয়ে গেছে। আপনি যদি কোনও বিষয়ে অভিজ্ঞ বা কোনও বিষয়ে উৎসাহী হন তবে আপনি এটিকে যথেষ্ট আয়ে রূপান্তর করতে পারেন।
শিক্ষার্থীদের অনলাইন কোচিং ক্লাস অফার করুন, আপনার অনলাইন কোচিং বাণিজ্য গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য একটি গ্রুপ তৈরি করুন। আপনি একটি ফেসবুক পেজ বা একটি পডকাস্ট সেট আপ করতে পারেন। যেখানে আপনি অনলাইন কোচিং ক্লাসগুলির আপলোড করতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। আপনি এই প্ল্যাটফর্ম গুলিতে নিবন্ধন করতে এবং কোচিং শুরু করতে পারেন।
-
গ্রাফিক ডিজাইন:
অনেকে ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্দেশ্যে সর্বদা গ্রাফিক ডিজাইনারের সন্ধানে থাকে। ব্যানার,পোস্টার এবং লোগো ডিজাইন করার এখানে সুযোগ অপরিসীম। আপনি আপনার গিগটি শুরু করার জন্য ছোট ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে আপনার নকশা দক্ষতা তৈরি করতে পারেন। গ্রাফিক ডিজাইনাররা প্রাসঙ্গিক কাজ সন্ধান করতে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইটেও যোগ দিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
-
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টি সেরা ব্যবসার ধারণা
-
বর্তমান বাংলাদেশের বেস্ট লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া
- ইউটিউব থেকেই প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় কিভাবে করবো?
-
ব্যক্তিগত ব্লগিং শুরু করুনঃ
বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন সফল ব্লগার আছেন। আপনার যদি ইংরেজিতে বা বাংলায় লেখার অভিজ্ঞতা থাকে তবে একটি ব্লগ শুরু করুন, এটা আপনার জন্য সেরা আইডিয়া। আপনি একজন ব্লগার হওয়ায় বাড়িতে বসেই ভাল পরিমান ইনকাম করতে পারবেন।
-
ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার:
মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি রুচিশীল হয়ে উঠেছেন। এই রুচিশীল মানুষ গুলা তাদের বাড়ি ঘর তৈরি করতে এখন অনেক বেশি সচেতন। বর্তমানে ঘরের বিন্যাস এবং অভ্যন্তর ডিজাইনারের প্রয়োজনে তাঁরা ডিজাইনার খোঁজেন। তাঁরা তাদের দেয়ালগুলির জন্য উপযুক্ত রঙ ও ফার্নিচার ডিজাইনার দের মাধ্যমে ঠিক করে নেয়।
আপনি Pinterest থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন, যা থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণের জন্য প্রচুর পরিমাণে interior নকশা করা আছে। আপনি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার আগে আত্মবিশ্বাস অর্জনের জন্য আপনার পরিচিত ব্যক্তির কাছে আপনার দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করতে পারেন
-
উবার:
উবার গাড়ি চালিয়ে আপনি বেশ ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারেন। গাড়ি চালানো ছাড়া আর কোন দক্ষতার প্রয়োজন নেই। আপনার সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা জানতে আপনি উবারের ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা তথ্য যাচাই করতে পারেন। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, প্রতি মাসে প্রকৃত লাভ সনাক্তকরণের জন্য গ্যাস, জ্বালানি, টোল চার্জ এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় নির্ধারণ করা ও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
-
একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলুন:
অনেকে ভ্রমণ,খাবার,দক্ষতা,আবেগ,পর্যালোচনা এবং স্ট্যান্ড-আপ কমেডি ভিডিও তৈরি করে হাজার হাজার ডলার উপার্জন করছেন। আকর্ষণীয় এবং অনন্য ভিডিও তৈরির জন্য আপনার যেই সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রহ ও পর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে এমন একটি বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন। আপনি যত বেশি বিনোদনমূলক ভিডিও পোস্ট করবেন, তত বেশি দর্শন এবং সাবস্ক্রাইব পাবেন। বেশ কয়েকটি সফল ইউটিউবার ভিডিও পোস্ট করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন। তবে, ১০০০ ভিউ এর জন্য গড়ে ইউটিউব প্রায় ১ ডলার থেকে ৩ ডলার প্রদান করে থাকেন।
তবে ইউটিউব চ্যানেলটি শুরু করার আগে, ইউটিউব নির্দেশিকা এবং কীভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে জানুন। এছাড়াও, আরও বেশি উপার্জনের সম্ভাবনার জন্য ভাল মানের ভিডিও তৈরি করতে একটি ভাল ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোনে বিনিয়োগ করুন।
আরও পড়ুনঃ
- গুগল আ্যাডসেন্স কি? গুগল অ্যাডসেন্স থেকে কিভাবে আয় করবেন?
- বিটকয়েন কি? কিভাবে কাজ করে? এবং বিটকয়েন এর ইতিহাস
-
একটি লাভজনক ব্লগ শুরু করুন:
আপনি যখন কোনও অনলাইন ব্যবসা শুরু করবেন, তখন আপনি ঠিক তিনটি জিনিস বিক্রি করেনঃ
- আপনার সময় (প্রশিক্ষণ বা পরামর্শ)
- আপনার নিজস্ব পণ্য (ই-কমার্স বা সাইট)।
- অন্য কারোর পণ্য (অনুমোদিত বিপণন বা বিজ্ঞাপন)।
একটি বিজনেস আইডিয়ার সাহায্যে আপনি একটি ওয়েবসাইট থেকে এই সমস্ত পণ্য বিক্রি করে সর্বাধিক অর্থ উপার্জন করতে পারেন খুব সহজেই।
-
একটি টি-শার্ট অনলাইন শপ খুলুনঃ
টি-শার্ট ব্যবসা বরাবরি জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। এর প্রবণতা সবসময় উর্ধ্বমুখী। ট্রেন্ডি টি-শার্ট পরা শহুরে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের একটি ফ্যাশন।
এই ব্যবসার জন্য আপনাকে অবশ্যই অনন্যভাবে আপনার টি-শার্ট ডিজাইন করতে হবে। অনন্য লগো, সমসাময়িক সমস্যা টি-শার্টে প্রতিফলিত হতে পারে। তরুণ প্রজন্ম এইসব খুবই পছন্দ করে। আপনি যদি সঠিক কাপড় এবং ভাল ডিজাইন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার শার্ট বাজারে আসবেই। এবং আপনি খুব সহজেই আপনার প্রতিষ্ঠানটি দার করাতে পারবেন।
-
অনলাইনে ফাস্ট ফুড শপের ব্যবসা:
এটি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে পছন্দের ব্যবসায়িক ধারণা। সবাই খেতে ভালোবাসে এবং খাবারে ভিন্ন স্বাদ পেতে চায়। আর এখন তো অনলাইনের মাধ্যমে খাবার ক্রয় বিক্রয় করা হয়, যার ফলে খাবার প্রিয় মানুষ গুলা যখন তখন খাবার অর্ডার করতে পারে। বর্তমানে অনলাইন ফাস্ট ফুড ব্যবসা করে অনেক উদ্যোক্তাটা সফল হয়েছেন। তাই আপনি ও অনলাইন ফাস্ট ফুড ব্যবসা করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আমার শেষ কথা…
এই ছিল আজকে অনলাইনে কম খরচে সেরা ১০ টি বিজনেস আইডিয়া নিয়ে লেখা। আশা করি আইডিয়াগুলো আপনার ব্যবসায়ে প্রয়োগ করতে পারবেন। নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে মাথায় রাখুন ১২টি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন।